আকাশের মেঘ কেটেছে আগেই। আবেগের বাধ ভাঙল ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। শহর থেকে জেলা পুজো প্যান্ডেলের সামনে শুধুই কালো মাথার সমাগম। রাত যত গভীর হয়েছে তত বেড়েছে ভিড়। এমনিতে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই বেশির ভাগ অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বভাবতই বেড়েছে ভিড়। প্যান্ডেল থেকে আলোক সজ্জায় সরগরম শহর কলকাতা। সময় যে কোথা থেকে পেরিয়ে যাচ্ছে বোঝাই দায়! পাড়া আর বাড়ির পুজোতেও আড্ডার মেজাজ। থিমের পুজো প্রতিবারই নতুন নতুন তারকার জন্ম দেয়। এবার সেই তারকার শিরোপার কার মাথায় ওঠে সেটাই খুঁজছে কলকাতা। যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় পুজো সব দিক থেকেই গ্লোবাল ফেস্টিভ্যাল। ভিন রাজ্যে বা ভিন দেশে থাকা মানুষরাও এখন পুজোর আনন্দের বাইরে নন।
বাঙালির সব উৎসবেরই শুরু পেট থেকে। তাই দুর্গা পুজোয় যে পেট পুজো হবে, এ আর বেশি কী! সেই মতো কলকাতার ছোট বড় সব খাবারের দোকানেই উপচে পড়া ভিড়। এবার রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর পুজোর সময় এ রাজ্যে আসা পর্যটকদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিল। তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে এই উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে কলকাতার খ্যাতনামা পুজো কমিটি গুলির সঙ্গে কথা বলেছে রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর। বিদেশি পর্যটকরা যাতে দেবী দর্শনের সুবিধা পান সেটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। তাঁদের যাতে ভীড়ের মধ্যে অপেক্ষা করতে না হয় সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য। আর এ উদ্দেশে গ্রিন চ্যানেল তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শুধু ঠাকুর দেখা বা প্যান্ডেল ঘুরে দেখা নয় পুজোর রীতি রেওয়াজের সঙ্গেও বিদেশিদের পরিচয় করাতে চায় তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর। আর তাই পুজোর ভোগ থেকে শুরু করে প্রসাদের স্বাদও বিদেশিদের কাছে পৌঁছে দিতে চায় নবান্ন। এছাড়া চতুর্থীর দিন থেকেই ‘হপ হপ সার্ভিস’ চালু হয়েছে । এর মাধ্যমে একটাই এসি, নন-এসি বাস, ট্রাম এবং লঞ্চে যাতায়াত করা যাবে। আর এই উদ্দেশে চালু হয়েছে অল ডে টিকিট । দাম একশো টাকা। রাত বারোটা থেকে পরদিন রাত বারোটা পর্যন্ত টিকিট বৈধ থাকবে। রাজ্য সরকারের পরিবহণ দপ্তরের ডিপো থেকে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াতের জন্য বাড়তি বাসও চলছে। এই সব নিয়েই মেতে আছে কলকাতা। যদি সোমবার রাত থেকে হিসেব করা হয় তাহলে আরও চার দিন এভাবেই কাটাবে বাঙালি।
© Copyright NDTV Convergence Limited 2025. All rights reserved.