শেষ আট বছর ধরে এটাই ওদের প্রথা, আর এটাই ওদের আনন্দ। প্রতিমা তৈরি হোক বা মণ্ডপসজ্জা, এমনকি আলোর সাজও তৈরি হয় ওদেরই হাতে। ওরা বালিগঞ্জ এলাকার একটি ছোট্টদের স্কুল। আদতে প্রি-স্কুল, কিন্তু ছোটদের নিখুঁত হাতের কাজ দেখে তাক লেগে যেতে পারে সকলের। আর শুধু তো দুর্গাপুজোর আয়োজনই নয়। ছোটদের ব্যস্ততা আপাতত তুঙ্গে, কারণ তাদের ছোট কাঁধেই তো ন্যস্ত স্কুল এগজিবিশনের গুরুদায়িত্বও। স্কুলের তরফে রঞ্জনা আরোরা জানালেন, এ বার প্রদর্শনীর থিম মা-শিশু। খুদে পড়ুয়ারা নিজেদের মনের মতো করে হাতের কাজ তৈরি করে সেখানে সাজাবে।
চলছে প্রস্তুতি
পুজোর ঠিক আগেই 13-15 অক্টোবর পড়ুয়াদের হাতে তৈরি নানা সামগ্রীর প্রদর্শনী চলবে তাঁদের স্কুল ক্যাম্পাসেই। আর 15 তারিখ থাকবে চোখ ধাঁধানো এক অনুষ্ঠান। সেখানে ছোট্ট ছোট্ট হাতে তৈরি মডেল, আঁকা ছবি, হরেক রকমের হাতের কাজ প্রদর্শিত হবে।
মণ্ডপসজ্জা
এই পুজোর সবথেকে বড় পাওনা সকলকে একসাথে নিয়ে চলার পদক্ষেপই। রঞ্জনা বলেন, “আমরা সকলে মিলে এক সঙ্গে হাত ধরে পাশাপাশি চলায় বিশ্বাসী। তাই কোনও শিশুকে এখানে আলাদা করে দেখা হয় না। কোনও শিশু যদি মেধার দিক থেকে পিছিয়ে থাকে তাকেও যেমন উৎসাহিত করা হয়, তেমনই থাকে অটিস্টিক শিশুরাও। শুধুমাত্র অংশগ্রহণ নয়, পুজোর সামগ্রী তৈরিতেও তারা সমান ভাবে অংশগ্রহণ করে।“
এ বছরের পুজোর থিম বৈষ্ণোদেবী। পৃথিবীতে সকল প্রাণের আসল চালিকাশক্তি মা দুর্গা। শিবের চালিকাশক্তিও দুর্গাই। তিনিই ন্যায়, সত্যের প্রতীক, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করে তিনি এ জগৎ চরাচরকে বহমান রাখেন। ধরিত্রী হয় সুজলা সুফলা। ঠিক এই ভাবনার উপরে ভিত্তি করেই বালিগঞ্জের ওই স্কুলে চলছে পুজো প্রস্তুতি।
ছোটরা বার্তা দিচ্ছে দূষণমুক্ত এক পৃথিবীর। সেখানে কোনও ক্লেদ নেই, হিংসা-দ্বেষ নেই। চরাচর জুড়ে শুধু শুধু শান্তির বাণী। ছোটদের হাত ধরে আমরা বড়রাও কি এগিয়ে আসতে পারি না, যাতে খুদে হাতে তুলে দিতে পারি একটুকরো সবুজ পৃথিবী। এ বারের পুজোয় না হয় এটুকু অঙ্গীকারই থাক।
© Copyright NDTV Convergence Limited 2025. All rights reserved.