বাঙালিদের বহু প্রতীক্ষিত উৎসব দুর্গাপুজো শুরু হয় মহালয়ার মাধ্যমে। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে থাকা বাঙালির কাছে দিনটি শুরু হয় ভোর চারটেয় বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী পালা দিয়ে। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। বাঙালিদের কাছে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের কণ্ঠে মহিষাসুর মর্দিনীর আবেদনই অন্যরকম। এই নিয়মের ব্যত্যয় হয় না। এই দিনটিও বাঙালির মূল্যবোধের অঙ্গ হয়ে উঠেছে।
মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে মাতৃপক্ষের সূচনা হয়। তারই সূচনা ঘটান দেবী দুর্গা অসুরশক্তি বধের মাধ্যমে। মহালয়ার ঠিক সাত দিন পরে শুরু হয় দুর্গাপুজো, শেষ হয় দশম দিনে দশমীর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
দেখুন ভিডিও :
এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে নানা রীতিনীতি জড়িয়ে রয়েছে। অনেকেই এ দিন মৃত পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় ‘তর্পণ’ করেন। অনেকে আবার ব্রাহ্মণ বা দুঃস্থদের মধ্যে খাবার, বস্ত্র বিতরণ করেন। এই দিনটিকে শুভ বলে মনে করা হয় কারণ, কথিত আছে এই দিনই দেবী দুর্গা চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে ধরাধামে পা রাখেন।
তরুণদের কাছে এ দিনের অন্য মাহাত্ম্য। তাঁরা এ দিন কুমোরটুলির পটুয়াপাড়ায় ঘুরতে যান। কারণ এ দিনই বেশিরভাগ শিল্পী মায়ের চক্ষুদান করেন। তা দেখতেই তাঁরা কুমোরটুলি পৌঁছন। ঠিক ব্রাহ্ম মুহূর্তে ভোর চারটেয় মহালয়ার সূচনার সময়ে মায়ের চক্ষুদান শুরু হয়। বহু উৎসাহী ফোটোগ্রাফার মায়ের জীবনদানের এই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতে পৌঁছে যান কুমোরটুলির পটুয়াপাড়ায়।
গঙ্গার ঘাটেও এ দিন থাকে পুণ্যার্থীদের ভিড়। সকলেই প্রায় তর্পণের উদ্দেশ্যেই সেখানে জমায়েত করেন। দুর্গাপুজো ও নবরাত্রিকে ঘিরে যে উৎসব মেজাজ, তার সূচনা হয় মহালয়ার হাত ধরেই। এ দিন থেকেই বিভিন্ন মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গা মূর্তি পাড়ি দেওয়া শুরু হয়। মহালয়ার মুহূর্ত নিয়ে আসে আনন্দঘন ইতিবাচকচতা, উৎসব মুখরতা এবং আসন্ন উৎসব কালের সমারোহ।
বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও পুজোয় শোলার ব্যবহার দেখা যায়। কিন্তু শিল্পীরা সাধারণত প্রচারের আলোর বিপরীতেই রয়ে যান।
পুজোর মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে মা যাতে এসে কালো অশুভ হাতের বিনাশ করেন। আর মায়ের সেই বিনাশ মূর্তির মধ্যে দিয়েই জেগে উঠুক নতুন প্রাণ।
পুজো প্যান্ডেল তৈরি হল এক বিশেষ দাবিকে সামনে রেখে। না কোনও রাজনৈতিক বা সামাজিক দাবি নয়, এই দাবি একেবারেই শহুরে, কলকাতাকে ভালবাসার প্রতীক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শহর, কলকাতার পরিচিতি সিটি অফ জয় নামে। কিন্তু আয়োজকরা চান কলকাতা পরিচিত হোক সাহিত্যের শহর হিসেবে। তাই এবার রাজা রামমোহন সরণির চালতা বাগানের পুজোর থিম বিশ্বকবি। 76 বছরে পা দেওয়া চালতাবাগানের থিমের পোশাকি নাম কবিগুরুর শান্তিনিড়। উদ্দেশ একটাই ইউনেস্কোর থেকে স্বীকৃতি আদায় করে নেওয়া।
সাদার্ন নুকের দুর্গাপুজোর এ বার ১০ বছরে পা। তবে এই আবাসনের পুজোয় এ বার রয়েছে নতুন স্পেশ্যালিটি। এ বার মায়েদের হাতেই জগজ্জননীর পুজোর ভার ন্যস্ত।
সূদূর জার্মানির বার্লিন শহরে বসেও দুর্গাপুজোর উৎসবে মাতোয়ারা একদল ভারতীয়। পুজোর আয়োজন থেকে উপকরণ কোথাও নেই এতটুকু কার্পণ্য।
পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অফ রাশিয়া ইন্টার ক্লাবে এবছর ধুমধাম করে আয়োজিত হচ্ছে মস্কোর দুর্গাপুজো। 15 অক্টোবর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে উদযাপন। 19 অক্টোবর পর্যন্ত চলবে নানা অনুষ্ঠান।
বর্ধমানের সুমিত কোঙার। আপাতত এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিষয়ে পোস্ট ডক করছেন। বছর দুয়েক হল বিলেতে আছেন। সেখানে গিয়েই বুঝেছেন নতুন জায়গায় গিয়ে পুজোর ব্যাপারে খোঁজ খবর পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। বিলেতের এদিক ওদিকে থাকা ভারতীয় তথা বাঙালিরা জানতেই পারেন না, ঠিক কোথায় হচ্ছে পুজো। সেই সমস্যা থেকেই মুক্তি দিতেই উদ্যোগ নিলেন সুমিত।