ওরা ভেবেছিলো যত বার মায়ের পুজোয় অঞ্জলি দিতে যাবে, তত বারই এ ভাবেই তাড়া খেয়ে পালাতে হবে আজীবন। ‘অপরাধ’ ওরা পথশিশু। এ বার আর ওদের কেউ বাধা দেবে না। কারণ ওদের হাতে তৈরি মাতৃমূর্তিই পূজিত হবেন ওদের পুজোয়, ‘ফুটপাথের দুর্গাপুজোয়’। ওদের বেশিরভাগই বাগবাজার এলাকার ফুটপাথে বাবা মায়েদের সঙ্গেই থাকে। বাবা মায়েদের নিত্যদিন নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর জোগার, সেখানে পুজো অঞ্জলি নিয়ে মাথাব্যথার সময় কই! তবুও ফি বছরই ছোটদের ইচ্ছে হতো আর পাঁচ জনের মতো ঠাকুরের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পায়ে ফুল ছুড়ে অঞ্জলি দেবে। রিয়া দাস, সুজিত দাস, দেব দাসেরা জানালো, আমাদের নোংরা জামাকাপড় দেখে সব প্যণ্ডেল থেকে বার করে দিত, ভাবতো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে গিয়েছি। আমরা কিন্তু শুধু অঞ্জলি দেওয়ার জন্যই যেতাম।
ওদের হাতেই এ বার আয়োজিত হচ্ছে দুর্গাপুজো। পথশিশুরা নিজেরাই বেছে নিয়েছে তাদের থিম ‘ইচ্ছেপূরণ’। তবে ওরা পাশে পেয়েছে অর্গোভব হিউম্যানিটি ডেভলপমেন্টের কর্ণধার মহেন্দ্র ও রেশমি আগরওয়াল। মহেন্দ্র জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী মাঝেমধ্যেই বাগবাজার এলাকায় যেতেন। তখনই চোখে পড়ে ওই পথশিশুরা মূর্তি বানানোর চেষ্টা করছে। তা হয়তো খুব বেশি প্রোফেশনাল নয় কিন্তু তাতে ছোটদের নিজস্বতার ছোঁয়া রয়েছে। এরপরেই ওই দম্পতি সিদ্ধান্ত নেন এই শিশুদের মধ্যেকার প্রতিভা যাতে হারিয়ে না যায়, তাই তাদের জন্য কিছু করতে হবে। সেখান থেকেই আসে দুর্গাপুজোর ভাবনা। সোমবার নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা ছোটদের এই পুজোয় গিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতিমায় তুলির টান দেন। পরে তিনি পথশিশুদের মধ্যে জামাকাপরও বিতরণ করেন।
পুজোর প্রচার ও জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা দীপান্বিতা বাগচী জানান, ফুটপাথের পুজোয় পূজিত হবেন ছোটদেরই তৈরি প্রতিমা। তাঁৱ বাহুল্য নেই কিন্তু রয়েছে আন্তরিকতা। প্রথমে ফুটপাথেই পুজো করার কথা ভাবা হলেও পরে অনুমতি না মেলায় স্থানীয় সারদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুজো করার সিদ্ধান্ত হয়। আর কচিকাঁচারা জানাল, আমাদের ইচ্ছাপূরণ হবে এই পুজোয়। আমরা দুর্গা মায়ের কাছে আমাদের সব আবদার জানাবো, আর প্রাণ ভরে অঞ্জলি দেব। এ বার তো আর কেউ আমাদের বাধা দিতে পারবে না। হাসিতে জ্বলজ্বল করে ওঠে খুদে খুদে মুখগুলো।
বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও পুজোয় শোলার ব্যবহার দেখা যায়। কিন্তু শিল্পীরা সাধারণত প্রচারের আলোর বিপরীতেই রয়ে যান।
পুজোর মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে মা যাতে এসে কালো অশুভ হাতের বিনাশ করেন। আর মায়ের সেই বিনাশ মূর্তির মধ্যে দিয়েই জেগে উঠুক নতুন প্রাণ।
পুজো প্যান্ডেল তৈরি হল এক বিশেষ দাবিকে সামনে রেখে। না কোনও রাজনৈতিক বা সামাজিক দাবি নয়, এই দাবি একেবারেই শহুরে, কলকাতাকে ভালবাসার প্রতীক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শহর, কলকাতার পরিচিতি সিটি অফ জয় নামে। কিন্তু আয়োজকরা চান কলকাতা পরিচিত হোক সাহিত্যের শহর হিসেবে। তাই এবার রাজা রামমোহন সরণির চালতা বাগানের পুজোর থিম বিশ্বকবি। 76 বছরে পা দেওয়া চালতাবাগানের থিমের পোশাকি নাম কবিগুরুর শান্তিনিড়। উদ্দেশ একটাই ইউনেস্কোর থেকে স্বীকৃতি আদায় করে নেওয়া।
সাদার্ন নুকের দুর্গাপুজোর এ বার ১০ বছরে পা। তবে এই আবাসনের পুজোয় এ বার রয়েছে নতুন স্পেশ্যালিটি। এ বার মায়েদের হাতেই জগজ্জননীর পুজোর ভার ন্যস্ত।
সূদূর জার্মানির বার্লিন শহরে বসেও দুর্গাপুজোর উৎসবে মাতোয়ারা একদল ভারতীয়। পুজোর আয়োজন থেকে উপকরণ কোথাও নেই এতটুকু কার্পণ্য।
পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অফ রাশিয়া ইন্টার ক্লাবে এবছর ধুমধাম করে আয়োজিত হচ্ছে মস্কোর দুর্গাপুজো। 15 অক্টোবর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে উদযাপন। 19 অক্টোবর পর্যন্ত চলবে নানা অনুষ্ঠান।
বর্ধমানের সুমিত কোঙার। আপাতত এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিষয়ে পোস্ট ডক করছেন। বছর দুয়েক হল বিলেতে আছেন। সেখানে গিয়েই বুঝেছেন নতুন জায়গায় গিয়ে পুজোর ব্যাপারে খোঁজ খবর পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। বিলেতের এদিক ওদিকে থাকা ভারতীয় তথা বাঙালিরা জানতেই পারেন না, ঠিক কোথায় হচ্ছে পুজো। সেই সমস্যা থেকেই মুক্তি দিতেই উদ্যোগ নিলেন সুমিত।