দুর্গাপুজো সারা দেশ জুড়েই উদযাপিত হয়। কোলকাতার মতো এমন ধুমধাম করে না হলেও বিভিন্ন রাজ্যের নানা শহরেই বিভিন্ন উপায়ে পালিত হয় এই অনুষ্ঠান। দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণীয় অংশ হল নানা থিমে মণ্ডপ সাজানো। এক এক পুজো কমিটির এক এক রকম তাক লাগানো থিম ভাবনা।
লখনৌ শহরের এক দুর্গা পুজো কমিটি তাদের মণ্ডপ সজ্জার থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে রাফালে বিমানকে। তাঁদের বক্তব্য, যাতে মা দুর্গা এই বিমানটি কিনতে ভারতের সব বাধা নাশ করেন তাই এই থিম ভাবা হয়েছে।
"আমরা মণ্ডপে রাফালে বিমানের চারটি কাটআউট ব্যবহার করছি এবং এটাই দুর্গাপুজোয় আমাদের থিম। আমরা চাই মা দুর্গা আমাদের ভারতীয় বায়ুসেনাকে আরও ক্ষমতা প্রদান করুন, যাতে এই বিমান কিনতে সব বাধা কাটিয়ে ওঠা যায়” বলেন ক্যান্টনমেন্ট দুর্গাপুজো কমিটির মিডিয়া সচিব নীহার রঞ্জন দে।
তিনি আরও জানান, মায়ের আশীর্বাদ নিয়েই বিমান ও অস্ত্র ব্যবস্থারের আরও আধুনিকীকরণ ঘটবে। এছাড়াও, দেশ রাফাল বিমান পাবেই।
তিনি জানান, যোদ্ধা বিমানের দুইটি কাটআউট সেলফি পয়েন্টে রাখা হয়েছে আর বাকি দু’টি মণ্ডপের ভিতরে দেবী দুর্গার কাছে স্থাপন করা হবে। নীহার রঞ্জন বলেন, “আমরা এই চুক্তির বিতর্কের মধ্যে নেই। আমরা আমাদের নাগরিক, জওয়ান এবং সীমান্ত নিরাপদ রাখতে চাই এবং রাফাল অবশ্যই আমাদের শক্তিশালী করবে।"
1952 সালে প্রতিষ্ঠিত এই পুজো কমিটির আয়োজকরা আশাবাদী যে রাফাল থিমের মণ্ডপ বেশ ভিড় টানবে, কারণ এভাবে কেউ থিম ভাবতে পারেনি আগে। "আমাদের কমিটি সর্বদা দেশপ্রেমিক থিম ব্যবহার করে। গত বছর, আমরা আমাদের জাতীয় পতাকার প্যান্ডেল করেছিলাম, উদ্দেশ্য ছিল জনগণের মধ্যে দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগানো।" বলেন নীহার রঞ্জ দে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলোকশিল্পীরা LED লাইট ব্যবহার করে মণ্ডপের আলোকসজ্জা সেরেছেন। তিনি আরও বলেন, "গত বছরও, আমরা ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের (55 ফুট) প্রতিলিপি বানিয়েছিলাম। আজ, মঙ্গলবার থেকে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে এই প্যান্ডেল।"
গত বছর সেপ্টেম্বরে ভারত রাফালে জঙ্গী বিমানের ক্রয়ের জন্য প্রায় 58 হাজার কোটি টাকার চুক্তি করে ফ্রান্সের সাথে। প্যারিস সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রস্তাবটি ঘোষণা করার প্রায় দেড় বছর কেটে গিয়েছে। 2019 সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে এই বিমানের ডেলিভারি। কংগ্রেস সম্প্রতি এই চুক্তি সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উত্থাপিত করেছে এবং জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা নিয়ে সমঝোতা করার অভিযোগেও তুলেছে মোদি সরকারের প্রতি।
লক্ষ্ণৌতে অন্যান্য দুর্গাপুজো কমিটিও নানা থিমে প্যান্ডেল গড়েছে। স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন বন্ধু মহল, 2019 সালের কুম্ভ মেলাকেই থিম করেছে। "কুম্ভ চলো" নামে স্লোগান তুলেছেন তাঁরা।
বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও পুজোয় শোলার ব্যবহার দেখা যায়। কিন্তু শিল্পীরা সাধারণত প্রচারের আলোর বিপরীতেই রয়ে যান।
পুজোর মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে মা যাতে এসে কালো অশুভ হাতের বিনাশ করেন। আর মায়ের সেই বিনাশ মূর্তির মধ্যে দিয়েই জেগে উঠুক নতুন প্রাণ।
পুজো প্যান্ডেল তৈরি হল এক বিশেষ দাবিকে সামনে রেখে। না কোনও রাজনৈতিক বা সামাজিক দাবি নয়, এই দাবি একেবারেই শহুরে, কলকাতাকে ভালবাসার প্রতীক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শহর, কলকাতার পরিচিতি সিটি অফ জয় নামে। কিন্তু আয়োজকরা চান কলকাতা পরিচিত হোক সাহিত্যের শহর হিসেবে। তাই এবার রাজা রামমোহন সরণির চালতা বাগানের পুজোর থিম বিশ্বকবি। 76 বছরে পা দেওয়া চালতাবাগানের থিমের পোশাকি নাম কবিগুরুর শান্তিনিড়। উদ্দেশ একটাই ইউনেস্কোর থেকে স্বীকৃতি আদায় করে নেওয়া।
সাদার্ন নুকের দুর্গাপুজোর এ বার ১০ বছরে পা। তবে এই আবাসনের পুজোয় এ বার রয়েছে নতুন স্পেশ্যালিটি। এ বার মায়েদের হাতেই জগজ্জননীর পুজোর ভার ন্যস্ত।
সূদূর জার্মানির বার্লিন শহরে বসেও দুর্গাপুজোর উৎসবে মাতোয়ারা একদল ভারতীয়। পুজোর আয়োজন থেকে উপকরণ কোথাও নেই এতটুকু কার্পণ্য।
পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অফ রাশিয়া ইন্টার ক্লাবে এবছর ধুমধাম করে আয়োজিত হচ্ছে মস্কোর দুর্গাপুজো। 15 অক্টোবর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে উদযাপন। 19 অক্টোবর পর্যন্ত চলবে নানা অনুষ্ঠান।
বর্ধমানের সুমিত কোঙার। আপাতত এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিষয়ে পোস্ট ডক করছেন। বছর দুয়েক হল বিলেতে আছেন। সেখানে গিয়েই বুঝেছেন নতুন জায়গায় গিয়ে পুজোর ব্যাপারে খোঁজ খবর পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। বিলেতের এদিক ওদিকে থাকা ভারতীয় তথা বাঙালিরা জানতেই পারেন না, ঠিক কোথায় হচ্ছে পুজো। সেই সমস্যা থেকেই মুক্তি দিতেই উদ্যোগ নিলেন সুমিত।